রাকিবুল ইসলাম, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর)
প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:১১ পিএম
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বন্যাকবলিত চরাঞ্চল রক্ষায় নির্মিত ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। প্রবা ফটো
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বন্যাকবলিত চরাঞ্চল রক্ষায় নির্মিত ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়কটি যেন মারণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থানে সড়কের কার্পেটিং উঠে সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত ১৬ বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কের এই বেহাল অবস্থার তৈরি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন আশপাশের প্রায় ৫০ গ্রামের মানুষ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কের হায়দরগন্জ কাঠেরপুর, চমকাবাজার, হাজিমারা স্লুইসগেট, মোল্লারহাট, বটতুলি, বাংলাবাজার, গাইনের ব্রিজ, খলিফারহাট, মিনাফকির, সমিতিরহাট, নতুন বেরিবাজার, কড়ই তোলাবাজার অংশে কার্পেটিং উঠে তৈরি হয়েছে গর্তের। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনসহ পথচারীরা রাস্তা পার হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর আগে মেঘনা নদী সংলগ্ন উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী, উত্তর চরবংশী ও উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের বন্যাকবলিত এলাকার কৃষি ফসল রক্ষার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে।
স্থানীয় চরকাছিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাবুল ও শহজালাল মাঝিসহ অনেকেই জানান, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। দ্রুত সংস্কার করার জন্য জোরালো দাবি জানাই।
রিকশাচালক মতিন মিয়া বলেন, ভাঙা রাস্তায় রিকশা আটকে যায়, অনেক সময় রিকশার চাকা ভেঙে যায়, কখনও কখনও যাত্রী নিয়ে রিকশা উল্টে যায়, বেড়িবাঁধের নিচেও পড়ে যায়। তাই এখন বেড়িবাঁধ দিয়ে রিকশা চালাই না।
৮নং দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান দিদার মোল্লাসহ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, খানাখন্দে ভরা এই পথে প্রতিদিন শত শত ট্রাক-লরি, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে কয়েক গ্রামের সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী। প্রতিনিয়ত সড়কের কোথাও না কোথাও ঘটছে দুর্ঘটনা। এই সড়ক দিয়ে গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের যাতায়াত করা অসম্ভব হয়ে গেছে। তা ছাড়া বেড়িবাঁধ সংস্কার না করলে সামনের বর্ষায় বন্যার পানি ফসলের ক্ষতি করতে পারে।
এ ব্যাপারে ৮নং দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরায়েজি বলেন, এই বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য এলজিইডি বরাবর লিখিত দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা কর্মকর্তা (পাউবো) মোবাইল ফোনে বলেন, বেড়িবাঁধ আমাদের কিন্তু বেড়িবাঁধের ওপর সড়কের কাজ আমাদের না, এটা উপজেলা এলজিইডির কাজ।
এলজিইডির উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী সুমন মুন্সি বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদকে নিয়ে সড়কটি আমি পরিদর্শন করে এসেছি। ইতোমধ্যে সংস্কারের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরীর মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে কিছু অংশ টেন্ডার হয়েছে। আশা করছি বাকি অংশও দ্রুত বাজেট আসবে।